
‘একাধিকবার নার্স নিয়োগ হয়েছে। অথচ রেজিস্ট্রেশন পাওয়ার পর হাজার হাজার নার্স চাকরির আবেদন করতে পারেননি। এমতাবস্থায় কোনো নার্স আত্মহত্যা করলে দায় সরকারকেই নিতে হবে।’
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আন্দোলনরত নার্স নেতারা এ কথা কথা বলেন। বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয়ের নার্স-নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে আগের মতো ব্যাচ, মেধা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নার্স নিয়োগের দাবিতে বাংলাদেশ ডিপ্লোমা বেকার নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিডিবিএনএ) ও বাংলাদেশ বেসিক গ্র্যাজুয়েট নার্সেস’ সোসাইটি (বিবিজিএনএস) যৌথভাবে গত ৪ এপ্রিল থেকে এ অবস্থান ধর্মঘট পালন করে আসছে।
নার্স নেতারা বলেন, ‘অযৌক্তিকভাবে হঠাৎ করে পরীক্ষা পদ্ধতিতে নার্স-নিয়োগ বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে। বাণিজ্যের কথা ভেবেই এই পরীক্ষা পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অথচ ১০ বছর যাবৎ হাজার হাজার নার্সদের সুবিধা-বঞ্চিত রাখা হয়েছে।’
নার্স নেতারা জানান, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত নতুন সিনিয়র স্টাফ নার্সের ১০ হাজার পদসহ মোট ১৩ হাজার ৭২৮টি শূন্য পদ রয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে শূন্য পদ রয়েছে ৩ হাজার ৭২৮টি। তারা এই পদের ৮৯ ভাগে ডিপ্লোমা-ইন-নার্সিং ডিগ্রিধারী রেজিস্টার্ড নার্সদের এবং ১১ ভাগে বেসিক বিএসসি-ইন-নার্সিং ডিগ্রিধারীদের মধ্য থেকে নিয়োগের দাবি জানিয়ে আসছেন।
তারা বলেন, ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত আগস্ট সরকারি পর্যায়ে নার্সিং কর্মকর্তার ঘাটতি মেটাতে ১০ হাজার নার্সের পদ সৃষ্টির ঘোষণা দেন। এ সরকার দুই ধাপে ব্যাচ, মেধা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে প্রায় ৬ হাজার ৫০০ নার্স নিয়োগ দেয়। সরকারি পর্যায়ে নার্সিং কর্মকর্তার ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। তবুও বর্তমানে ডিপ্লোমা-ইন-নার্সিং ডিগ্রিধারী এবং বিএসসি-ইন-নার্সিং ডিগ্রিধারী বেকার নার্সের সংখ্যা সর্বমোট প্রায় ২১ হাজার ৫০০।
বেকার নার্সদের অবস্থান ধর্মঘটের ১২তম দিনেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো সাড়া মেলেনি। রোদ, ঝড়, বৃষ্টি এমনকি পহেলা বৈশাখ নববর্ষের আনন্দ উপেক্ষা করেই দিনরাত বঞ্চিত নার্সরা তাদের অবস্থান ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছেন।
দাবি আদায় না করে তারা ঘরে ফিরবেন না। এ ক্ষেত্রে কোনো ষড়যন্ত্রই বাধা হয়ে দাঁড়াবে না বলে দৃঢ়তার সঙ্গে জানান আন্দোলনরতরা।